কবিতার ভাষা কিংবা নিরাসক্ততার কাব্যফর্মে র বোঝাপড়া
![]() |
কবিতার ভাষা কিংবা নিরাসক্ততার কাব্যফর্মে র বোঝাপড়া |
কবিতাকে কোন ফর্মে লিখতে চাচ্ছি সেটা বড় কথা নয়। কবি যে ভাবে চান সেভাবে কি কবিতাটি কবির নিজস্ব অনুভবের শিহরণে, ভাবাবেগকে, শব্দের দ্যোতনায়, অবাধে শৈল্পিক বিচরন, বিমোচন প্রয়োগে প্রকাশ করতে পারছেন কিনা সেটাই বড় কথা । কবিতা হচ্ছে কি হচ্ছেনা সেটা বিচার এর দায় কবির নয়। আমি বিশ্বাস করি পাঠকই কবিতা পড়ে কবিতা কোন ফর্মে র সেটা আবিস্কার করেন।
কবিতাকে কতোটা ন্যারেটিভ ফর্মে
করা যায়, না কবিতাকে কোলাজ ফর্মে করবো, না কবিতাকে স্যুরিয়ালিস্টিক ফর্মে নিয়ে যাবো, না কবিতাকে
ম্যাজিক রিয়ালিজম
ফর্মে যাবো? কোন কবিই কি কোন কবিতা শুরুর আগে কোন ফর্মে
কবিতাটি লিখবেন, সেটা কি ঠিক করে নিয়ে লেখেন?এছাড়া দ্বন্দীকতা, বাস্তবতা, পরবাস্তবতা, ইচ্ছা, নষ্টালজি,স্বপ্ন আর সম্ভাবনা,
আধ্যাত্মিকতা, নিরাসক্ততা সহ বহু রকমের কাব্যফর্মে অনেকেই লেখেন। যারা লেখেন তাদের কবিতাকে আমি যান্ত্রিক-কৃত্রিম
কবিতা বলবো।
এছাড়া
গদ্য আর গীতিধর্ম – এই দুই বিপরীতের
সমন্বয় সাধিত হয়েছে তিন
উপাদানের চৌকস মেলবন্ধনে,
এক.
মুক্তক অক্ষরবৃত্তের অসমপার্বিক আবর্তন, পর্ববিন্যাসের স্বাধীনতার কল্যাণে যা প্রায় গদ্যের
মতো বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে;
দুই.
অন্তমিল আর মধ্যমিলের কারুকাজ
এবং
তিন.
মিষ্টি চলতি শব্দের অনায়াস
সংস্থান। যদিও
সামগ্রিক গীতিধর্ম কমে গদ্যের বিবৃতিধর্ম
ক্রমেই বেড়েছে। তাই বলে
কি কবিতা হচ্ছে না।
কবিতা হচ্ছে শব্দশিল্প
এর সেই মাধ্যম যা কবির হাত দিয়ে কোন পরিকল্পনা ছাড়াই তৈরি হয়ে যায় কোন পরিকল্পনা ছাড়াই। কবিতা হচ্ছে উচ্চক্বীত
আহ্বান।
তাই
কবিতা কোন
গন্ডি
মানে
না। আর কবিতার উচ্চক্বীত আহ্বানের গভীরে আছে এক
অচিন-হয়ে-আসা ‘ভাষা’র পুনর্নির্মাণ।
বুর্জোয়া নন্দনতত্ত্বের যে কোনো মাপকাঠিতে
এটা এক রকমের ত্বুরীয় এনতেজাম। কখনো
কবি নিজে কোনো অর্থেই তার কবিতার
অংশ হননা। অর্থাৎ,
কবির বলার কথাগুলো তাঁর নিজের কথা
নয়, এমনকিও তাঁর শ্রেণিরও
নয়। কিন্তু
দুটোরই সার্বিক সিদ্ধান্ত কবির কবিতাটিতে আছে। কবিতা
বদলে
যেতেই
পারে কবিতারতো
কোথাও
কোন বাঁধা
নেই।
কবিতা লিখতে গিয়ে কবিতায় জীবন দর্শনের যে
প্রধান
তিনটি
দিক
এর মুখোমুখি দাঁড় করাতে চাই
;-
এক.
বেঁচে থাকার আনন্দ বা বেঁচে
থাকার অনিচ্ছা
দুই.
পার্থিব জগতের সীমাবদ্ধ তুচ্ছতার প্রতি
সকরুণ ভালোবাসা বা
করুণা এবং
তিন.
সেই সঙ্গে অব্যক্ত বিরাটের
প্রতি অনুরাগ বা ব্যাক্ততার প্রতি আসক্তি।
আমার কবিতার জীবন দৃষ্টিময়তায় সমৃদ্ধির চিহ্ন, কবিতার ভাব-ভাষা নিয়ে নীরিক্ষা -প্রক্রিয়ায় কবিতায় কিভাবে সেটাকে
উম্মোচিত করে এর বেপরোয়া পরিণাম কি হবে হয়তো সেটাই আমার কবিতা জীবনের
সৌন্দর্য, স্বপ্ন আর সম্ভাবনা, নীরিক্ষা -প্রক্রিয়ার
গতিপ্রকৃতি।
নিজের বৈশিষ্টতা অক্ষুণ্ন রেখেই সংশ্লিষ্ট দশজনের
কথা কবিতায়
বলতে চাই যেন কথাগুলো নিজেরই কথা।
একইভাবে নিজের কথা কবিতায় বলতে চাই যেন
পুরো সমাজের কথা কবিতায় বলছি।
এইসব বোঝাপড়ার কাজ ভবিষ্যতের জন্য
রাখা থাকবে, যেমন আমরা
সকলেই জানি।
কবিতার কি কোনো ধারা আছে?
সব ধারার সমন্বয় করে কি কবিতা লেখা যায়না?
কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন